
সৌখিন কৃষক জুয়েল প্রধান। সমন্বিত ফল বাগান করে সাফল্য পেয়েছেন তিনি। প্রথমে শখের বসে বিভিন্ন ফলের বাগান করেছিলেন। এর পরিধি বেড়ে এখন রূপ নিয়েছে এগ্রো ফার্মে।
৪৫ বিঘা বাগান জুড়ে গড়ে ওঠা এগ্রো ফার্মের নাম ‘জুয়েল-আখি এগ্রো ফার্ম’। বাগানে রয়েছে কমলা, মাল্টা, ড্রাগন, পেয়ারাসহ বিভিন্ন প্রকার ফল গাছ। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই এগ্রো ফার্ম থেকে লাখ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
জুয়েল প্রধানের বাড়ি সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের বীর পাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মরহুম হাজী খামির উদ্দীন প্রধানের ছেলে। নিজের নাম এবং স্ত্রী আখি প্রধানের নামের সমন্বয়ে এগ্রো ফার্মের নামকরণ করেছেন। বাড়িতে গরু, দেশি মুরগী এবং বিভিন্ন জাতের কবুতরও পালন করেন এই সৌখিন কৃষক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক একর জায়গা জুড়ে গড়া বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে সুস্বাদু ও রসালো কমলা। কমলার সাথী ফসল হিসেবে বাগানে রয়েছে পেঁপে গাছ। কমলা এবং পেঁপে উভয়রই ফলন হয়েছে বাম্পার। কমলার পাশের এক একর জমিতে রয়েছে মাল্টা, এক বিঘা জমিতে ড্রাগন, দেড় বিঘায় লটকন এবং এক একরে পেয়ারার বাগান।
এছাড়াও রয়েছে ১৪ বিঘা জায়গায় চা, ১০ বিঘায় আম এবং ৫ বিঘায় সুপারি বাগান। এসব বাগানে সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থান। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন সেখানে। প্রতিটি ফসলই মৌসুম ভেদে ফলন দেয় বলে জানা গেছে। জুয়েল প্রধান জানান, তার সমন্বিত এই ফল বাগান জৈব বালাইনাশক পদ্ধতিতে করা হয়েছে। রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমাতে বাড়িতেই উৎপাদন করা হয় কেঁচো সার।
তিনি বলেন, আগে থেকেই স্বপ্ন ছিলো একটি ফল বাগান করার। সেই আলোকেই শখের বসে কমলা চাষ শুরু। দিনদিন বাগানের পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। যোগ করা হয়েছে ড্রাগন, পেয়ারা, লটকন। গত বছরের তুলনায় এবছর কমলার ফলন বেশি হয়েছে। ভালো দাম পেলে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা বিক্রি সম্ভব। তিনি আরো বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শ মতে বাগানের পরিচর্যা করছি। বর্তমান প্রতি বছর তিন থেকে চার লাখ টাকার আম বিক্রি করছি। আগামী কয়েকবছরের মধ্যেই সমন্বিত এই ফল বাগান থেকে বছরে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব হবে।
জুয়েল প্রধানের স্ত্রী আখি প্রধান বলেন, বর্তমান বাগানে কমলার ফলন রয়েছে। কমলার মান ভালো হওয়ায় বাগান থেকেই পাইকাররা কিনে নেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শাহ আলম মিয়া বলেন, জুয়েল-আঁখি দম্পতি প্রথমে শখের বসে কমলা চাষ শুরু করে। পরে কৃষি অফিসের বিভিন্ন পরামর্শ এবং সহায়তায় বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করে। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে চলছে তার এগ্রো ফার্ম। তিনি জানান, পঞ্চগড়ে এখনো পর্যন্ত ৮৫ হেক্টর জমিতে মাল্টা, ১৫ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে কমলা এবং ১০ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে।